সৌদি আরবের বুকে ‌‌‘এক টুকরো নরসিংদী’

নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া (নবাব বাড়ি)-র বাসিন্দা এইচ এম মুকুল। জীবনের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ১৯৯৮ সালে সৌদি আরব পাড়ি দেন। সৌদি যাওয়ার মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে সৌদিতে পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি রিয়াদ থেকে মক্কা-মদিনা রুটে বাস সার্ভিস চালু করেন। আর এই বাসের নাম রাখেন ‘বিশাল অ্যান্ড মাইশা এক্সপ্রেস’।

সৌদি আরবের লোকজন এই পরিবহনকে ‘নরসিংদী’ নামেই চেনেন। কেননা, বাসের সামনে এবং পেছনে বাংলায় বড় অক্ষরে ‘নরসিংদী’ নামটি লেখা রয়েছে। প্রবাসে যারা বসবাস করেন, তারা সবাই এই খবর জানেন।

নিজ জেলার নামে বাসের নামকরণের কারণ জানতে চাইলে এইচ এম মুকুল জানান, ‘নরসিংদী আমার প্রাণের জেলা। আমার জন্মভূমি। আমি যেখানেই যাই, নরসিংদীও আমার সঙ্গে যায়। তাই ২০০১ সালে যখন পরিবহন ব্যবসায় নামি, তখন আমার বাসের নামের সঙ্গে ‘নরসিংদী’ জুড়ে দেই।

এই যে ‘নরসিংদী’ নামকরণ, তা-ও বাংলায় লিখে রাখা। নিজের দেশের প্রতি, ভাষার প্রতি এমন মমত্ববোধের বিষয়ে তিনি জানান, ‘বাংলা আমার মায়ের ভাষা।

বিদেশে যখন আসি, তখন সব থেকে বেশি কষ্ট অনুভব করেছি এই ভাষার জন্য। চারদিকে তাকিয়ে আমার ভাষা দেখতে পাই না। বাংলায় কথা বলার মানুষ নেই খুব বেশি একটা।

‘আমার বাস সার্ভিসের আগে-পিছে বাংলায় ‘নরসিংদী’ লিখে দিয়েছি, এতে আমার ভালো লাগে। আমি গর্বিত আমার প্রাণের জেলা ও ভাষাকে প্রবাসে এভাবে সবার সামনে তুলে ধরতে পেরে।’

দেশের রাস্তায় নিজ জেলার নামে বাস দেখে উল্লসিত হন সেখানকার বাংলাদেশিরাও, বিশেষ করে নরসিংদী জেলার মানুষজনতো আছেই। রিয়াদে বসবাসরত পারুলিয়া এলাকার সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, সৌদিতে এই বাস সার্ভিসটি খুবই ভালো সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

আর সব থেকে বড় কথা হলো, এটা আমাদের দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রবাসে নিজের জন্মভূমি, জেলা আর ভাষা এভাবে দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে যাই আমরা।